এবার থাকবে না মুভমেন্ট পাস কঠোর লকডাউনের প্রজ্ঞাপন জারি
এবার থাকবে না মুভমেন্ট পাস কঠোর লকডাউনের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার করোনা মহামারীর কারণে মানুষের জীবনযাত্রার মান স্বাভাবিক নেই।মানুষ এবং পুরো পৃথিবীর সবকিছু পিছিয়ে গিয়েছে এই করোনা মহামারীর কারণে।মানুষের সাধারণ চলাফেরা আর নেই নেই।
মানুষ খুবই কষ্টের ভেতরে এখন জীবনযাপন করছে।তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে আগামী ১ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৭ জুলাই রাত ১২টা পর্যন্ত সারাদেশে কঠোর বিধিনিষেধ দিতে যাচ্ছে সরকার। এই সময়ে ঘরের বাইরে আসা যাবে না, এবার থাকবে না মুভমেন্ট পাসও। এছাড়াও সোমবার (২৮ জুন) সচিবালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকের পর প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানান বলে জানা গিয়েছে।
এছাড়াও জানা যায় কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে এবং করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেনাবাহিনী, বিজিবিও মাঠে থাকবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।আগামী ১ জুলাই থেকে সব বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্ট্রিক্ট ভিউতে (কঠোর অবস্থানে) যাচ্ছি আমরা। এতটুকুই শুধু বলে দিলাম। ১ তারিখ ভোর ৬টা থেকে ৭ তারিখ রাত ১২টা পর্যন্ত স্ট্রিক্ট ভিউতে যাচ্ছি আমরা। খুবই স্ট্রিক্ট ভিউতে, কারণ চারটি জেলার সঙ্গে আমরা ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বিস্তারিত পর্যালোচনা করে দেখেছি।
সেখানে বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি, ডিআইজি, এসপি, সিভিল সার্জন, পরিচালক, জনপ্রতিনিধি, মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান সবাই ছিলেন। সবারই বক্তব্য এবং সেখানে গ্রাফিক প্রেজেন্টেশন তাতে দেখা যাচ্ছে যে, দেশের একটা বড় অংশ অরেঞ্জ, রেড বা ব্রাউন হয়ে যাচ্ছে। সুতরাং এখন আমাদের বিধিনিষেধ আরোপ করা ছাড়া উপায় নেই।যতোই দিন যাচ্ছে করোনা পরিস্থিতি ততোটাই ভয়ংকর হয়ে যাচ্ছে।সুতরাং কঠোর লকডাউন ছাড়া এ পরিস্থিতি স্বাভাবিকে আনা সম্ভব না।
এছাড়াও মন্ত্রিপরিষদের সচিব আরও বলেন, ‘কিছু বাস্তব কারণের জন্য আমরা ৩০ জুন পর্যন্ত (কঠোর বিধিনিষেধ) করতে পারছি না। সেজন্য ১ তারিখ থেকে স্ট্রিক্ট রেস্ট্রিকশনে যাচ্ছি আমরা। আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হবে কঠোর লকডাউন। লকডাউনে দরিদ্র মানুষের কী হবে সেটা জানতে চাইলে এ বিষয়ে খন্দকার আনোয়ারুল বলেন, ‘আজকে ক্যাবিনেট মিটিংয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রীকে পরিষ্কারভাবে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে গতবারের মতো সামাজিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রেখে সকল দরিদ্র মানুষকে সাহায্য করা হবে তালিকার মাধ্যমে।এছাড়াও দেখা যায় শহরে গরীব মানুষদের বেশি সমস্যা হয় সেক্ষেত্রে শহরের গরীবদের সাহায্য করা হবে এবং খাবার পৌঁছে দেওয়া হবে।
তারপরেও কেউ খাবার না পেলে ৩৩৩ এই নাম্বারে কল দিলে খাবার পৌঁছে দেওয়া হবে।কঠোর লকডাউন বাস্তবায়ন করতে সেনাবাহিনী, বিজিবি, ব্যাটালিয়ন পুলিশ সবাই টহলে থাকবে বলে জানা গিয়েছে। তাদের যতটুকু সময় যা দরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অথরিটি দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে যাতে কোনোভাবেই মানুষ গণহারে লকডাউন ব্রেক করতে না পারে। সেটা তারা মনিটরিং করবে।’কারণ মানুষ যদি লকডাউন না মানে তাহলে ভারত বা ইতালির মতো পরিস্থিতি বাংলাদেশেও হতে পারে। কঠোর বিধিনিষেধের বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে বলেও জানান তিনি।
৭ জুলাইয়ের পর বিধিনিষেধ বাড়তে পারে কি-না, জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আমরা দেখি, আমাদের যে অভিজ্ঞতা সেখানে দেখেছি, ১৫-২০ দিনে সুপারভাইস করছি, যেসব এলাকায় যেমন চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্ট্রিকলি ব্লক করে দেয়াতে (করোনা সংক্রমণ) অনেক কমে গেছে। সাতক্ষীরাতে ইম্প্রুভ করেছে। যেখানে যেখানে আইসোলেটেড করে দিয়েছি, মুভমেন্ট রেস্ট্রিকটেড করে দিছি, সেখানে সেখানে ইম্প্রুভ করেছে। সরকার যদি দেখে পরিস্থিতি স্বাভাবিকের দিকে যাচ্ছে তাহলে লকডাউন শিথিল করা হবে নাহলে লকডাউন আরো ৭ দিন বাড়াতে পারে।
এবার আমরা জেনে নিবো কঠোর লকডাউনের প্রজ্ঞাপন জারির বিষয়গুলোঃ- করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ১ জুলাই থেকে পর্যন্ত ৭ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
১) করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে এই কঠোর লকডাউনে।
২) জনসমাগম হয় এমন সকল অনুষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে অবশ্যই।
৩)কঠোর লকডাউনে সড়কপথ,রেল-পথ,নৌ-পথ ও অভ্যান্তরীণ ফ্লাইট বন্ধ থাকবে বলে জানা গিয়েছে।
৪)এছাড়াও সকল প্রকার বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ থাকবে বলে জানা গিয়েছে।
৫) স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালু থাকবে শিল্পকারখানা।শিল্পকারখানা বন্ধ থাকবে না।
৬)কঠোর লকডাউনে সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত খোলা জায়গাই নিত্য প্রয়োজনীয় পন্য কেনাবেচা করা যাবে।যেমনঃ-সবজি বাজার,মুদির দোকান,সকল কাচামালের দোকান ইত্যাদি।
৭) কিন্তু চালু থাকবে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট।
৮)কঠোর লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত হোটেল ও রেস্তোরার পার্সেল সার্ভিস চালু থাকবে।কিন্তু হোটেলে বসে কেউ খেতে পারবে না।সবাইকে নিজ নিজ খাবার পার্সেল নিতে হবে।
৯)সকল শপিংমল সহ সব ধরণের দোকান ও গণপরিবহন বন্ধ থাকবে এই কঠোর লকডাউনে।
১০)এই কঠোর লকডাউনের ভেতরে চিকিৎসা, মৃতদেহ দাফন, বাজার করার মত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকে বের হওয়া যাবে না।
১১)স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদে নামাজ আদায় করা যাবে।এছাড়াও এ বিষয়ে নির্দেশনা দিবে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
১২)আর ব্যাংকিং সেবার বিষয়ে নির্দেশনা ও সিদ্ধান্ত দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলে জানা গিয়েছে।
১৩)এছাড়াও আদালতের বিষয়ে আদালত পরিচালনা করবে কি না সেটা নির্দেশনা দিবে সুপ্রিম কোর্ট।
১৪)এছাড়াও জানা গিয়েছে কঠোর লকডাউনে বিমান,নৌ,স্থলবন্দর বিধিনিষেধের আওতামুক্ত থাকবে।
১৫)এছাড়াও এই খারাপ পরিস্থিতিতে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাহিরে গেলে শাস্তির ব্যবস্থা থাকবে বলে জানা যায়।
১৬)কঠোর লকডাউন বাস্তবায়ন করতে এবং বিধিনিষেধ কার্যকর করতে মাঠে থাকবে সশস্ত্র বাহিনীও।
সুতরাং আমাদের সকলের উচিত এই বিধিনিষেধ গুলো মেনে চলা নাহলে পরিস্থিতি আরোও খারাপের দিকে যেতে পারে।আর এর ফলে হতে পারে অনেক মানুষের মৃত্যু।এছাড়াও বাংলাদেশে হতে পারে ইতালি কিংবা ভারতের থেকে খারাপ এবং ভয়ংকর অবস্থা। আমাদের সকলের উচিত বিধিনিষেধ গুলো মেনে চলা এবং অতি জরুরী প্রয়োজন ছাড়া বাসার বাহিরে বের না হওয়া। এছাড়াও আমরা সবসময় মাস্ক পরিধান করবো।
এছাড়াও বিভিন্ন ধরণের চাকরি বিজ্ঞপ্তি পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।