করোনা ভাইরাস : বিশ্ব মহামারী করোনাতে লকডাউন আবারো বাড়লো
বিশ্ব মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউনের মেয়াদ আরেক ধাপ বাড়িয়েছে বাংলাদেশ সরকার।বিশ্ব মহামারী করোনা ভাইরাসের ভয়ে আরো ১ সপ্তাহ লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।তথ্য অনুযায়ী বিশ্ব মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আদেশে জানা গিয়েছে,বিশ্ব মহামারী করোনা ভাইরাস বিস্তার রোধে সব ধরনের কাজকর্ম ও চলাচলে বিধিনিষেধ আরো ১ সপ্তাহ অর্থ্যাৎ ২৩শে মে মাঝরাত পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
১৩ মে ঈদের আগের দিন সময়সীমা আভাস দেয়া হয়েছিল।কিন্তু এবার তা রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক ঘোষনা দিয়েছে।লকডাউন চলাকালীন অবস্থায় পূর্বের সব বিধিনিষেধ ও কাজকর্ম অব্যাহত থাকবে।এছাড়াও জানা গিয়েছে এবার ২টি নতুন শর্ত যোগ করা হয়েছে। সেগুলো হলঃ লকডাউনে সরকারের রাজস্ব আদায়ের সাথে সম্পৃক্ত সব দফতর ও সংস্থা জরুরি পরিসেবার আওতাভুক্ত হবে।এছাড়াও আরো জানা গিয়েছে খাবারের দোকান ও হোটেলে খাবার খাওয়া যাবে না কিন্তু খাবার নিয়ে বাহিরে নিজ স্থানে গিয়ে খাবার খাওয়া যাবে।
এছাড়া অনলাইনের মাধ্যমে খাবার অর্ডার করা এবং বিক্রি করা যাবে।এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ যেনো সকল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এ বিষয়ে নেওয়া হয়।এবছর মার্চের শেষ দিকে হঠাৎ দ্রুত গতিতে করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকে।এর ফলে সরকার ৫ এপ্রিল থেকে সাত দিনের জন্য প্রথম বিধিনিষেধ জারি করে।সেসময় গণপরিবহন চলাচলের সাথে আরো বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয় যা পরে আরো ২ দিন বাড়ানো হয়েছিল।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ার কারণে ১৪ই এপ্রিল থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত আরেক দফা সময়সীমা বাড়ানো হয়েছিল বিধিনিষেধর।পরে সেটি ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত এবং আরো এক দফায় ৫ই মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়।ঈদের ছুটিতে ১৬ মে পর্যন্ত আবার বিধিনিষেধ বাড়ানো হয়েছিল মানুষের চলাচলের নিয়ন্ত্রণের কারণে।সর্বশেষ জেলার মধ্যে গণপরিবহন ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়।কিন্তু জেলা থেকে অন্য জেলায় গণপরিবহন,ট্রেন ও লঞ্চ বন্ধ রাখা হয়।
এছাড়াও শুরুতে শপিংমল দোকান বন্ধ রাখা হলেও ২৫ এপ্রিল থেকে খুলে দেওয়া হয় সাথে ব্যাংকও খোলা রাখা হয়।এবারের প্রজ্ঞাপনে আগের সকল বিধিনিষেধ ও দিক নির্দেশনা প্রযোজ্য হবে বলে জানা গিয়েছে।
আগের প্রজ্ঞাপনের শর্তগুলো যা ছিলো তা আমরা সকলে একটু আবার জেনে নিবো।সেগুলো নিচে দেওয়া হলঃ
১.বিশ্ব মহামারী করোনা লকডাউনের কারণে সব সরকারি আধা সরকারি স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীরা ঈদের ছুটিতে আবশ্যিকভাবে নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করবেন।
২.বিশ্ব মহামারী করোনার লকডাউনের কারণে শপিং মল/দোকান সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। সব দোকানপাট-শপিং মলে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া দোকানপাট শপিং মল তাৎক্ষণিক বন্ধ করে দেওয়া হবে।
৩.বিশ্ব মহামারী করোনা লকডাউনের কারণে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় গণপরিবহনের চলাচল বন্ধ থাকবে। অর্থাৎ দূরপাল্লার বাস, সেইসঙ্গে ট্রেন, লঞ্চের চলাচল আগের মতোই বন্ধ থাকবে।
৪.বিশ্ব মহামারী করোনার লকডাউনের কারণে মাস্ক ব্যবহার শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে মোবাইলকোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।সেক্ষেত্রে কেউ আইন না মানলে তাকে কঠোর শাস্তি ভোগ করতে হবে।
৫.বিশ্ব মহামারী করোনার কারণে জনসমাবেশ হয় এ ধরনের সামাজিক ও রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে।অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৬.বিশ্ব মহামারী করোনা প্রতিরোধে সিটি কর্পোরেশন, জেলা সদর, পৌরসভা এলাকাসমূহে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিধান, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি পালনের জন্য তথ্য মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা মাইকিংসহ ব্যাপক প্রচার প্রচারণার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে
।আর এসকল বিধিনিষেধ বা নির্দেশনা সকলকে মানার জন্য অনুরোধ করা হলো।আর যারা এসকল বিধিনিষেধ মানবে না তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এছাড়া বিশ্ব মহামারী করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে ঘরে বসে সেবা নিলে অন্যদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য ১০টি পরামর্শ নিচে দেওয়া হলঃ
১)সবসময় একটি আলাদা রুমে থাকতে হবে।করোনা পজিটিভ হলে অন্যদের সাথে সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে।এছাড়াও এক রুমে না থাকা সম্ভব হলে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
২) করোনা পজিটিভ হলে যে রুমে থাকবেন ওই রুমে বেশি করে আলো বাতাস ঢুকার ব্যবস্থা করতে হবে।
৩) সবসময় মাস্ক পরে থাকা উতিত।বিশেষ করে যখন মানুষের সাথে থাকবেন তখন অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে।
৪) একজন সেবা প্রদানকারী রাখতে হবে বেশি সংখ্যক রাখা যাবে না।আর সেবা প্রদানকারী যেনো মানুষের সাথে সংস্পর্শে না আসে।আর সেবা প্রদানকারীর স্বাস্থ্যগত জটিলতা না থাকলে ভালো।
৫) করোনা পজিটিভ থাকাকালীন সকল আত্মীয় এবং পরিবারের সদস্যদের সাথে সংস্পর্শে আসা যাবে না।
৬) প্রতিনিয়ত যে জিনিসগুলো সংস্পর্শ করা হয় সেগুলো পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
৭) করোনা পজিটিভ রোগীর জিনিসপত্র থালা-বাসন,কাপ,কাপড়,খাবার,বিছানার চাদর ইত্যাদি অন্য কেউ যেনো ব্যবহার না করে।আর এগুলে সাবান বা পাউডার দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে নিয়মিত।
৮) হাঁচি বা কাশি দেওয়ার সময় টিস্যু বা কাপড় ব্যবহার করতে হবে এবং সে ব্যবহৃত জিনিস ডাস্টবিনে ফেলতে হবে।
৯) ঘরে যারা অবস্থান করবে সবাই যেনো সবসময় সাবান ব্যবহার করে হাত ভালোমতো পরিষ্কার করে।
১০) করোনা পজিটিভ রোগীর ঘর থেকে ময়লা আবর্জনা বের করার সময় সবসময় ভালো এবং শক্ত প্যাকেটে সেগুলোকে ডাস্টবিনে ফেলতে হবে।
সবশেষে বলা যায় বিশ্ব মহামারী করোনা ভাইরাস থেকে সকলের সাবধান থাকা উচিত।এছাড়াও সকলের মাস্ক ব্যবহার করা উচিত এবং ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ধোয়া উচিত।